আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও হোয়াইট হাউজের শীর্ষ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার কাতারের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ীদের একজনের কাছ থেকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পরেই দেশটির বিরুদ্ধে ট্রাম্পকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চাপ দেয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তাতেই বেসামাল হয়ে পড়েছে হোয়াইট হাউজ। রিয়েল এস্টেট ব্যাবসার প্রথম দিকে ২০০৭ সালে কুশনার ব্যবসার জন্য নিউ ইয়র্কের ৬৬৬ ফিফথ অ্যাভিনিউয়ে ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছিলেন।বর্তমানে ভবনটির এক-চতুর্থাংশেরও বেশি অফিস স্পেস খালি আছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের দেয়া তথ্য অনুসারে, গত কয়েক বছর ধরে ভবনটি থেকে যে আয় হয় তা এর জন্য নেয়া ঋণ শোধ করার জন্য যথেষ্ট নয়।এই কারণেই কুশনার চেয়েছেন, অন্য উপায়ে ঋণের টাকা তুলতে।
২০১৫ সালে একদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন, অন্যদিকে জ্যারেড কুশনার তার বাবার সঙ্গে মিলে সম্পত্তিকে বাঁচাতে চেষ্টা করছিলেন। একটা সময় বাপ-ছেলে মিলে কাতারের ধনকুবের, রাজপরিবারের সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হামাদ বিন জসিম আল-থানিকে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী হিসেবে চিহ্নিত করেন। দ্য ইন্টারসেপ্ট জানায়, আলোচনার পর শেখ হামাদ বিন জসিম আল-থানি শতকোটি ডলারের এই প্রকল্পে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি হন। কিন্তু শর্ত রাখেন, প্রকল্পের বাকি অর্থ কুশনারকেই জোগাড় করতে হবে। বাকি অর্থের ব্যবস্থা করতে কুশনারের এই রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান চীনের আনব্যাং ইনশিওরেন্স কোম্পানির শরণাপন্ন হলে কোম্পানিটি চলতি বছরের মার্চের শুরুর দিকে ৪০ কোটি ডলারের নির্মাণ ঋণ দিতে রাজি হয়। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরই তারা সরে পড়ে। আনব্যাং সরে পড়ায় কুশনারের কোম্পানি শেখ হামাদ বিন জসিম আল-থানিকে দেয়া শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়।
ওই বিলিওনিয়ার ঋণচুক্তিটি বাতিল করে দেন। তবে অন্য আরো সূত্র বলছে, তিনি চুক্তিটি আপাতত স্থগিত রাখেন। যেটাই ঠিক হোক, এর অল্প কিছু সময় পরই গত ৫ জুন সন্ত্রাসবাদে মদত ও অর্থ দেয়ার দায়ে কাতারের সঙ্গে সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমির আমিরাত সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানালেও ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যুইটারে বলেন, সৌদি আরবে সৌদি বাদশাহসহ বাকি ৫০ মুসলিম দেশের সঙ্গে আলোচনার সুফল এই অবরোধ। প্রেসিডেন্টের এই অবস্থান টিলারসনকে হতবাক করলেও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর পিছনে জ্যারেড কুশনারেরই হাত রয়েছে। টিলারসনের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র ‘দ্য আমেরিকান কনজার্ভেটিভ’কে জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটা বিষয়ে নিশ্চিত যে ট্রাম্পের কাতার সম্পর্কিত মন্তব্যের বেশ কিছু অংশ আমেরিকায় নিযুক্ত আমিরাতের রাষ্ট্রদূত এবং কুশনারের কাছের বন্ধু ইউসুফ আল ওতাইবা নিজে লিখেছেন। ওতাইবা জ্যারেডকে বুঝিয়েছেন আর জ্যারেড ট্রাম্পকে। অবশ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে মন্তব্য চাওয়া হলে জবাব দেননি ট্রাম্প জামাতা।